দুই বছরের বেশি সময় পর চলতি ফেব্রুয়ারিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বদলির পাইলটিং কার্যক্রম উদ্বোধন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় বদলি কার্যক্রমের পাইলটিং শুরু হবে। তারপর পর্যায়ক্রমে সারাদেশের সব শিক্ষকদের বদলি কার্যক্রম চলবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ফেব্রুয়ারিতে শিক্ষক বদলি কার্যক্রম উদ্বোধন করার পরিকল্পনা নিয়েছে মন্ত্রণালয়। পাইলটিং শেষ করেই পর্যায়ক্রমে সকল শিক্ষকদের বদলি কার্যক্রম চলবে। অনলাইন সফটওয়্যার প্রস্তুত আছে। উদ্বোধন হলেই দ্রুত সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অনলাইনে বদলি কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়ার পর দুই বছরের বেশি সময় প্রাথমিকের শিক্ষক বদলি বন্ধ রয়েছে। কথা ছিল করোনাভাইরাসের কারণে সরকার আরোপিত বিধিনিষেধ ওঠে গেলে সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের অনলাইন বদলি শুরু হবে। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিলেও পাইলটিং উদ্বোধন না হওয়ায় পুরো কার্যক্রম বন্ধ।
গত বছর মার্চ মাসে অনলাইনে শিক্ষক বদলির প্রশিক্ষণ শেষ করে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় পাইলটিং শুরু হওয়ার কথা ছিল। পর্যায়ক্রমে শিক্ষক প্রশিক্ষণ দিয়ে সারাদেশে অনলাইনে শিক্ষক বদলি কার্যক্রম পরিচালনার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। তবে মন্ত্রণালয় জানায় করোনা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন কারণে পাইলটিং কার্যক্রমই শুরু করা সম্ভব হয়নি।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছিলেন, জানুয়ারিতে পাইলটিং শুরু হবে। যদিও সক্রিয় উদ্যোগ দেখা যায়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষক বদলি কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ (আইএমডি)। শিক্ষকদের ভোগান্তি লাঘবে এই সেবা চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
শিক্ষক বদলির বিদ্যমান পদ্ধতির ধাপগুলো বিশ্লেষণ করে সেবা দিতে বাস্তব সমস্যা, প্রতিবন্ধকতা, ধীরগতি এবং পদ্ধতিগত শূন্যতা নির্ণয় করা করা হয়। শিক্ষকরা তাদের শিক্ষক পিন (ই-প্রাইমারি সিস্টেম) ব্যবহার করে ওটিপি অথেনটিকেশনের মাধ্যমে লগইন করে নিজস্ব ইউআই (ইউজার ইন্টারফেস)-এ প্রবেশ করে আবেদন করতে পারবেন।
শিক্ষক এবং বিদ্যালয়ের তথ্যাদি আগে থেকেই ডাটাবেজে সংরক্ষণ থাকায় শুধু বদলির ক্ষেত্র অন্তঃউপজেলা, আন্তঃউপজেলা, আন্তঃজেলা, আন্তঃবিভাগ এবং অন্তঃসিটি করপোরেশন এবং বদলির কারণ সিলেক্ট করে বদলির আবেদন করা যাবে। মাসিক রিটার্ন, চাকরি বইয়ের ফটোকপি ইত্যাদি সংযুক্তির প্রয়োজন হবে না।
তবে ক্ষেত্রমতে স্বামী/স্ত্রীর কর্মস্থলের বা স্থায়ী ঠিকানার প্রমাণপত্র, বদলির কারণ কিংবা প্রেক্ষাপটের আলোকে প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র সংযুক্ত করতে হতে পারে। বিদ্যমান বদলির নীতিমালার শর্তাবলীর আলোকে এমনভাবে সফটওয়্যারে সবকিছু সেট করা হয়েছে যেন অযাচিত কিংবা বদলির শর্ত পূরণ করে না এমন কেউ আবেদন করতে পারবে না। শূন্যপদের সকল তথ্য ডাটাবেজে থাকায় শিক্ষকরা আবেদনের সময়ই বিদ্যমান সকল শূন্যপদ দেখতে পাবেন এবং এক বা একাধিক বিদ্যালয় বাছাই করে আবেদন করতে পারবেন।
সঠিকভাবে আবেদন সাবমিট করলে আবেদনকারী আবেদনের একটি পিডিএফ কপি এবং অ্যাপ্লিকেশন ট্র্যাকিং নম্বর সংবলিত সিস্টেম জেনারেটেড একটি রিসিপ্ট পাবেন এবং মোবাইলে নোটিফিকেশন পাবেন। তাছাড়া শিক্ষক পিন ব্যবহার করে লগইন করে যেকোনও সময় নিজের ড্যাশবোর্ড থেকে আবেদনের বর্তমান অবস্থান জানতে পারবেন। সফটওয়্যারে প্রতিটি ধাপে সময় নির্ধারণ করা থাকবে। ফলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আবেদনটি অগ্রসর হতে থাকবে এবং কোনও ধাপে অতিরিক্ত সময়ক্ষেপণের সুযোগ থাকবে না।
আবেদনকারীর বদলির প্রেক্ষাপটের আলোকে সিস্টেম থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্কোর নির্ধারিত হবে। ফলে আবেদনকারী একাধিক হলে অগ্রাধিকার তালিকাও সিস্টেম থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি হবে। ফলে একদিকে যেমন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে অন্যদিকে অযাচিত তদবির ও চাপ কমে যাবে।
তথ্যসূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।